সিবিএন ডেস্ক
আমি এ্যানি ভাইকে ওপেন চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি। তার কাছে যদি বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে আমি কোনো বক্তব্য দিয়ে থাকি, এর প্রমাণ থাকে অবশ্যই তিনি যেন সেটি হাজির করেন। আমি সেটা দেখার পরে আমার করণীয় ব্যাপারে সেটা ঠিক করবো। উনি ধারণা প্রসূত হয়ে বিদ্বেষমূলকভাবে অসত্য বক্তব্য দিয়ে গোটা বাংলাদেশের মানুষের কাছে আমাকে হেয় করছেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মর্যাদা ক্ষুন্ন করছেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেলে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১৫নং ওয়ার্ড দরগাহ মসজিদের উত্তর পূর্ব পাড়ায় গণসংযোগকালে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন জামায়াতের ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি রেজাউল করিম। তিনি লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের জামায়াতের প্রার্থী।
রেজাউল আরও বলেন, তিনি (এ্যানি) আমার বিরুদ্ধে অসত্য বিদ্বেষমূলক, রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত একই বক্তব্য বারবার দিয়ে আসছেন। তার বক্তব্যের মধ্যে আমি হুমকি লক্ষ্য করছি। আমি তার ছোট ভাইয়ের মতো, আমি উনার কাছ থেকে রাজনীতি শিখবো।
তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়া অসুস্থ, গোটা বাংলাদেশের মানুষ তার জন্য দোয়া করছে। আমরা তাকে শুধু বিএনপির নেত্রী মনে করি না। তিনি স্বাধীনতা স্বার্বভৌমত্বের একটি আপোষহীন প্রতীকের নাম। কারণ আমাদের নেতাদের যখন ফাঁসি দেওয়া হয়েছে, মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে, এই খালেদা জিয়া সবচেয়ে বেশি প্রতিবাদ করেছেন। মনে হচ্ছে উনাকে নিয়ে এ্যানি ভাই একটা ইমোশনাল গেইম তৈরি করছেন। বাধ্য হয়ে আমি কথাটি বলেছি। হয় ডকুমেন্ট থাকলে বক্তব্য দেখাতে হবে, আর না হয় উনার বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে।
এসময় লক্ষ্মীপুর শহর জামায়াতের আমীর আবুল ফারাহ নিশানসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব ও সংসদ সদস্য প্রার্থী শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) লক্ষ্মীপুর শহরের ইসলাম মার্কেট এলাকায় গণসংযোগকালে সাংবাদিকদের বলেছেন, টকশোতে জামায়াতের প্রার্থী স্বীকার করেছেন এক ধরনের রজনৈতিক দলের রাজনীতিবিদ এতিমের টাকা, দুঃস্থদের টাকা মেরে খেয়েছে। এই ধরনের বক্তব্য ইতোপূর্বে হাসিনা, ফ্যাসিস্টের দোসররা দিয়েছেন। তিনি খালেদা জিয়ার নাম নেননি সত্য, কিন্তু কথাটা কাকে মিন করলো? উনি খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করেই বক্তব্য দিয়েছেন। হাসিনা ফ্যাসিস্ট যেভাবে কথা বলেছে, উনিও (রেজাউল করিম) একইভাবে কথা বলেছেন। কিছু মিডিয়া এটাকে বিকৃত করেছে, বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। আমি প্রত্যাহার করে নিয়েছি, কি প্রত্যাহার করে নিলাম? তিনি কি ফ্যাসিবাদের মতো খালেদা জিয়াকে অসম্মানিত করেননি? উনাকে তার বক্তব্য প্রত্যাহারসহ ক্ষমা চাইতে হবে যে তিনি খালেদা জিয়াকে মিন করেননি।
প্রসঙ্গত, বিভিন্ন সভায় বিএনপি নেতা এ্যানির দেওয়া বক্তব্য নিয়ে মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজ মাঠে আয়োজিত একটি নির্বাচনী টকশোতে আলোচনা হয়। পরে জামায়াত নেতা রেজাউলের অনুরোধে এ্যানি বলেন, আমার ভাইয়ের অনুরোধে আমি আর এ বক্তব্য দেব না। কিন্তু কয়েকটি ফেসবুক পেইজে বলা হয় এ্যানি চৌধুরী তার বক্তব্য ‘প্রত্যাহার’ করেছেন। সচেতন মহলের দাবি ‘প্রত্যাহার আর বলবো না’ দুটি আলাদা শব্দ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রত্যাহার করা উল্লেখ করে প্রচারণা করায় হয়তো এ্যানি চৌধুরী পুনরায় রেজাউলকে বক্তব্য প্রত্যাহারসহ ক্ষমা চাইতে বলেছেন। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বিষয়টি মীমাংসা হওয়া জরুরী।
